প্রকাশিত: ২১/১০/২০১৯ ৯:০৭ এএম
ফাইল ছবি

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো দমন-পীড়ন-হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় দেশটির শাসকদের ওপর প্রবল চাপ প্রয়োগ ও দেশটির ওপর অবরোধ আরোপের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে। সম্প্রতি নেদারল্যান্ডসে অনুষ্ঠিত হওয়া রোহিঙ্গা বিষয়ক এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এ আহ্বান জানান।

রোহিঙ্গাদের জন্য সুবিচার ও তাদের ওপর হওয়া নির্যাতনের ব্যাপারে জবাবদিহিতা শীর্ষক আন্তর্জাতিক কনক্লেভ বা বিশেষ সভায় অংশগ্রহণকারী বিশেষজ্ঞরা বলেন, ধর্ষণ, খুন, অগ্নিসংযোগের মতো অপরাধকে উপেক্ষা করা যায় না। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসের (সিপিজে) আয়োজনে এই বিশেষ সভা হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নেদারল্যান্ডসের ইরাসমুস বিশ্ববিদ্যালয় রোটারডামের অন্তর্ভুক্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠান ইন্সটিটিউট অফ সোশ্যাল স্টাডিজ (আইএসএস) এবং এশিয়া জাস্টিস কোয়ালিশন এ আয়োজনে সহযোগিতা করে। এতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শতাধিক গবেষক ও বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও নীতি-নির্ধারক, খ্যাতনামা মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিশিষ্ট আইনবিদ অংশগ্রহণ করেন।

গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী আবুবকর ম্যারি টাম্বাডো বলেন, বর্তমান প্রজন্মের জন্য এটা অত্যন্ত লজ্জার যে, আমরা গণহত্যা বন্ধ করতে পারিনি। রোয়ান্ডার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি আরও বলেন, অবিশ্বাস, ঘৃণা, আর্থ-রাজনৈতিক ও ঐতিহাসিকভাবে ক্ষমতা কাঠামোর অভ্যন্তরীণ সম্পর্কের কারণে গণহত্যা সংঘটিত হয়।

মিয়ানমার বিষয়ক কানাডার বিশেষ দূত বব রে বলেন, যারা শরণার্থী শিবিরে যাননি, তাদের পক্ষে বোঝা কঠিন যে, রোহিঙ্গাদের ওপর কী ভয়ানক রাষ্ট্রীয় হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে।

বর্তমান রোহিঙ্গা সংকটের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে রোহিঙ্গা নেতা তুন কিন বলেন, “রোহিঙ্গাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব ছাড়া এই সংকটের কোনও সমাধান নাই।”

নেদারল্যান্ডসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শেখ মোহাম্মদ বেলাল তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উত্থাপন করা চার দফা প্রস্তাব উল্লেখ করেন।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে মিয়ানমারে দমন-পীড়নের শিকার হয়ে বাস্তুচ্যুত হওয়া ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত আন্তর্জাতিক অপরাধের প্রতিক্রিয়ায় কয়েকটি জবাবদিহিতার উদ্যোগ গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বলপ্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের দেশত্যাগে বাধ্য করাকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে গণ্য করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে আর্জি। এই পটভূমিতেই রোহিঙ্গাদের জন্য সুবিচার ও জবাবদিহিতার ওপর আলোকপাত করতে এই আন্তর্জাতিক সভার আয়োজন করা হয়। এর মূল বিষয় ছিল—নৃশংসতা, জবাবদিহিতা ও অ্যাডভোকেসি।

পাঠকের মতামত

আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকট সমাধান প্রয়োজন: ড. ইউনূস

রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সহায়তা বাড়ানো এবং ন্যায়সঙ্গত উত্তরণের পথ নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন ...

জাতিসংঘে প্রেসিডেন্ট পদে লড়বে বাংলাদেশ, প্রতিদ্বন্দ্বী ফিলিস্তিন

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮১তম অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে বাংলাদেশ। এবারের নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ...

জাতিসংঘে স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে হামাসমুক্ত স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব বিপুল ভোটে পাস হয়েছে। ...